পেনসিলভানিয়া, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

সর্বশেষ:
জামায়াতে যোগ দিলেন অর্ধশতাধিক বিএনপি–জাপা নেতাকর্মী জাপা ও জেপির নেতৃত্বে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ৮ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস আজ আমার হায়াত কমিয়ে হলেও খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দেন জোট গঠনের বিষয়ে যা বললেন সারজিস বিএনপির সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করল বাংলাদেশ লেবার পার্টি ১০ ডিসেম্বর তফসিল নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে না, বরং পুনর্গঠনের পথে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে যেসব আধুনিক সুবিধা দেশে এল তারেক রহমানের ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার গাড়ি, বিআরটিএতে নিবন্ধন সম্পন্ন পুলিশ কমিশন গঠন হচ্ছে, অধ্যাদেশ অনুমোদন নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে আম জনতার দল, চেয়েছে প্রজাপতি প্রতীক অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রণ পেলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন কমান্ডো এনএসজিসহ ২৪ ভারতীয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

“ভারতীয় পণ্য বয়কট ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রবাহ”

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:৪৭ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪

মো: নাজমুল হাসান বাবু

বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান এই তিনটি রাষ্ট্র একে অপরের সাথে অধরাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে আছে জন্মলগ্ন থেকে। ভারত পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাসের সাথে সুগভীর ভাবে মিশে আছে ভারতের নামটি তথাপি ধৃতকৃত হয়ে পাকিস্তানের নামটিও মিশে আছে বাংলাদেশের সাথে।


বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম লগ্ন থেকেই বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতের কাছ থেকে বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ এর প্রথম শুরু হয়েছিল বিজয়ে দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণের দিন থেকেই। আমাদের সেই ঐতিহাসিক ক্ষনে বঞ্চিত করেছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেই অনুষ্ঠান থেকে দূরে সরিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের যে আগ্রাসন সেটার প্রথম সূচিকাগার রচিত হয়েছিল, পাকিস্তানি পরাধীনতার শৃংখল ভেঙে বাংলাদেশ প্রবেশ করলো ভারতের দাসত্বের শিকলে। সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র কয়েকটি বছর পেরিয়ে না যেতেই স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ষড়যন্ত্র করে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে চেস্টা করল ভারত। সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ভঙ্গুর করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ও ভারতীয় রাজনীতির চতুরতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পরিচালনা করার ব্যর্থ চেষ্টা করলেন ভারত। ভারতের এই অপচেষ্টাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী। 

ভারতের নানা ষড়যন্ত্রকে ভেদ করে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে সামনে নিয়ে আসলেন দেশপ্রেমিক জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনারথে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দীপ্ত চ্যাতা রাষ্ট্র পরিচালনায় বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা এবং বাংলাদেশের সার্বভ ঠিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার যে অগ্রগতি সেটা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও ভারতীয় রাজনীতিবিদরা কখনোই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি। আধুনিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রের রূপকার ক্ষণজন্মা এই মহানায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে হত্যা করে বাংলাদেশকে ভারত আবারো তাদের নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নেন, থমকে যায় বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সকল বিষয়। বাংলাদেশ যখনই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছে তখনই ভারত তা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বারবার।


বিগত ১৮ বছর বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের অপচেষ্টায় একে একে ধ্বংস করেছে রাজনীতি, আইনের শাসন, বাজার ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, শিল্প-সংস্কৃতি ও হত্যা করেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশের জনগণের মনে ভারতের প্রতি ঘৃণার যে আবা সেটাও বিস্তৃতি ঘটেছে বহু গুনে। মানুষ এখন প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার ক্ষমতাটুকু হারিয়ে ফেললেও প্রতিবাদের ভাষাটুকু যেয়ে পড়ছে ভারতীয় পণ্যের উপর যা প্রতিটি মানুষ ইচ্ছে করলেই ভারতীয় পণ্য না কিনে নিরবে প্রতিবাদ করতে পারছে, তার ফলেই প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রখরতা তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। ভারতীয় পণ্যের বাজার মুখ থুবড়ে পড়ছে বাংলাদেশে, যা ভরতের অর্থনৈতিক বিভিন্ন সুচক গুলো দেখলেই আমরা স্বাভাবিকভাবে বুঝতে পারছি যে বিগত দিনে ভারতের পণ্য বাংলাদেশে যেভাবে আসতো এখন তার গ্রাফ অনেকটা নির্মমুখী। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক লোক পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে ঈদের কেনাকাটা করেন, এবার ঈদে বাংলাদেশীদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে ঈদের কেনাকাটা থেকে বিরত থেকেছেন যার ফলশ্রুতিতে অনেক ছোট দোকানি তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। একজন লেখক একজন ইউটিউবার “পিনাকী ভট্টাচার্য” অনলাইন এর মাধ্যমে তার ছোট্ট একটি ডাক “ভারতীয় পণ্য বর্জন” আজ মহা এক বিপ্লবের নামে রূপান্তরিত হয়েছে। ভারতীয় রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশি ভারতপন্থী লোকজনের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকটি। আপাতত দৃষ্টিতে তাকালেই দেখতে পাচ্ছি ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক আগামী দিনে ছড়িয়ে পড়বে দূর থেকে অনেক দূর। 

ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয়রা যেভাবে চিন্তা করেন তাদের মন ও মস্তিষ্কে যদি বাংলাদেশ নিয়ে তাদের ইতিবাচক চিন্তার উদ্ভব না ঘটে তাহলে আগামী দিনে পণ্য বয়কট থেকে ভারত বিরোধিতা আরো চরমে পৌঁছাবে সেটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এটার ফল ভারতকে ভোগ করতে হবে অনেক সময় ধরে। যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভারত পরিচালিত করতে চাচ্ছে, যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভারত নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে, যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে ভারতের শিক্ষিত যুবসমাজকে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করছে, তার প্রতিশোধ বাংলাদেশের জনগণ করাই-গন্ডায় নিবে এর উৎপত্তিস্থল সৃষ্টি হয়েছে এই ভারতীয় পণ্য বয়কটের মধ্য দিয়ে। ভারত যদি চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে তার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র গুলো তাদের প্রতি বা তাদের নীতি নির্ধারণী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি কি মনোভাব প্রকাশ করে, তাহলে হয়তো তারা অনেক সমীকরণ নিজেরাই মিলিয়ে নিতে পারবে।

মন্তব্যঃ

দুঃখিত, কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি!

নতুন মন্তব্য করুন:

ad
সকল খবর জানতে ক্লিক করুন
ad