পেনসিলভানিয়া, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

সর্বশেষ:
জামায়াতে যোগ দিলেন অর্ধশতাধিক বিএনপি–জাপা নেতাকর্মী জাপা ও জেপির নেতৃত্বে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ৮ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস আজ আমার হায়াত কমিয়ে হলেও খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দেন জোট গঠনের বিষয়ে যা বললেন সারজিস বিএনপির সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করল বাংলাদেশ লেবার পার্টি ১০ ডিসেম্বর তফসিল নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে না, বরং পুনর্গঠনের পথে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে যেসব আধুনিক সুবিধা দেশে এল তারেক রহমানের ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার গাড়ি, বিআরটিএতে নিবন্ধন সম্পন্ন পুলিশ কমিশন গঠন হচ্ছে, অধ্যাদেশ অনুমোদন নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে আম জনতার দল, চেয়েছে প্রজাপতি প্রতীক অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রণ পেলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন কমান্ডো এনএসজিসহ ২৪ ভারতীয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে দলগত সম্পৃক্ততা ও ‘সমন্বয়কারী তাপস’— জাতীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:০২ পিএম, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫

ঢাকা, ৩০ নভেম্বর ২০২৫: বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানসহ কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার (অব.), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতীক (অব.), সচিব (অব.) মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, অতিরিক্ত আইজিপি (অব.) ড. এম. আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।


প্রতিবেদন গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,

“বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতি দীর্ঘদিন ধরে অন্ধকারে ছিল। আপনারা সত্য উদ্‌ঘাটনে যে ভূমিকা রেখেছেন, জাতি তা স্মরণে রাখবে।”


তিনি আরও বলেন, এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বহু দীর্ঘদিনের প্রশ্নের উত্তর মিলবে এবং ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি মূল্যবান শিক্ষণীয় দলিল হয়ে থাকবে।


কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান জানান, ১৬ বছর আগের এই ঘটনার বহু আলামত ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তদন্ত ছিল অত্যন্ত কঠিন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন।


তিনি বলেন,

“সাক্ষীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে। আগের তদন্তের রিপোর্ট ও অন্যান্য উপাদান সংগ্রহ করে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে।”


কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার জানান, তদন্তে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে বহিঃশক্তির সম্পৃক্ততা এবং তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগকে সমর্থনকারী প্রমাণ পাওয়া গেছে— বলে কমিশন দাবি করেছে।


তিনি আরও বলেন,

— ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত

— প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস

— স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযুক্তদের রক্ষায় সরাসরি ভূমিকা রেখেছে


তালুকদার দাবি করেন, ঘটনার শুরুতে ২০–২৫ জনের একটি মিছিল পিলখানায় প্রবেশ করলেও বের হওয়ার সময় সে সংখ্যা দুই শতাধিক হয়ে যায়।


তালুকদার আরও বলেন,

“পুরো ঘটনার পেছনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রিন সিগন্যাল ছিল”— যা কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে বলে তিনি জানান।

তবে এ বিষয়ে সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—

• সেনাবাহিনী কেন দ্রুত অ্যাকশন নেয়নি, তার ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করা হয়েছে

• পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকার মাঝে ‘‘চরম ব্যর্থতা’’ লক্ষ্য করা গেছে

• কিছু সাংবাদিক ও গণমাধ্যম অপেশাদার আচরণ করেছে


এছাড়া অভিযোগ করা হয়েছে যে, যমুনায় যে বিডিআর সদস্যদের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেছিলেন তাদের পরিচয় ও তথ্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।


কমিশন বাহিনীগুলোর মধ্যে যোগাযোগ, কমান্ড কাঠামো, অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সক্ষমতা উন্নয়নে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে— যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয়কর ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে। একইসঙ্গে ভিকটিমদের ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছে।


জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনিও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্যঃ

দুঃখিত, কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি!

নতুন মন্তব্য করুন:

ad
সকল খবর জানতে ক্লিক করুন
ad